পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের ৭৮ জনের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ : কপালে চিন্তার ভাঁজ

23rd August 2020 10:14 pm বর্ধমান
পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের ৭৮ জনের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ : কপালে চিন্তার ভাঁজ


বাবু সিদ্ধান্ত ( বর্ধমান ) :  করোনা  থেকে রেহাই পাচ্ছেন না পুলিশ কর্মীরা। বর্তমান পরিস্থিতিতে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে তারা মানুষকে পরিষেবা প্রদান করছেন । এলাকায় এলাকায় মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি খাদ‍্য সামগ্ৰীও পৌঁছে দিচ্ছেন । কিন্তু এবার করোনার থাবা পুলিশ কর্মীদের মধ‍্যে ।  শনিবার রাত পর্যন্ত আসা রিপোর্ট আনুযায়ী পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের ৭৮ জনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে । তার মধ্যে ১৮ জনই জেলার খণ্ডঘোষ থানার পুলিশ আধিকারিক ও কর্মী। তার জেরে এই প্রথম  রাজ‍্যের মধ‍্যে  তালা পড়লো খণ্ডঘোষ থানায়।  ইতিমধ্যেই জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৩৯ জনের।  স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে , গত শুক্রবার 
পুলিশ আধিকারিক ও কর্মী মিলিয়ে খণ্ডঘোষ থানার ৪ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে ।  সেই রিপোর্ট মেলার পরেই উদ্বেগ বাড়ে পুলিশ প্রশাসনের  । সেই কারণে শনিবার থানার পুলিশ অফিসার ও কর্মী মিলিয়ে ১৮ জনের ‘অ্যান্টিজেন টেস্ট ’ হয় । ওই দিন রাতে রিপোর্ট আসলে জানাযায় ১৮ জনের মধ্যে ১৪ জনের রিপোর্ট পজেটিভ । আক্রান্তদের মধ্যে খণ্ডঘোষ থানার অফিসার ইন-চার্জ রয়েছেন । ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে খণ্ডঘোষ থানার এতজন পুলিশ কর্মীর করোনা পজিটিভ ধরা পড়ার পরেই থানা ভবনে যাবতীয় প্রশাসনিক কাজকর্ম বন্ধ করেদেওয়া হয় । আক্রান্তদের মধ্যে ৪ জনের করোনা উপসর্গ থাকায় তাঁদেরকে ভর্তি করা হয়েছে বর্ধমানের কোভিড হাসপাতালে ।দেড় মাসের ব্যবধানে অফিসার ইন-চার্জের দ্বিতীয় বার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ায় তাকে চিকিৎসার জন্য  কলকাতার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে । বাকি আক্রান্তদের ‘হোম আইসোলেশনে’ পাঠানো  হয় । এরপর রাত থেকেই তালা পড়েযায় খণ্ডঘোষ থানায় । থানার অদূরে থাকা একটি অনুষ্ঠান বাড়ি ভাড়া নিয়ে এখন সেখান থেকেই প্রশাসনিক কাজকর্ম চালানো হচ্ছে ।  জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন ,‘পরিষেবা পেতে সাধারণ মানুষের যাতে কোন অসুবিধা না হয় তার সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে । তিন দিনের  মধ্যে খণ্ডঘোষ থানা ভবন জীবানু  মুক্ত করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে । ’জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে ,পূর্ব বর্ধমান জেলায় করোনা আক্রান্ত পুলিশ কর্মীর সংখ্যা এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০ ছুইছুই ।  পুলিশ কর্মীর করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে । আক্রান্তদের মধ্যে জেলা পুলিশের দুই শীর্ষ আধিকারিক ছাড়াও ওসি পদ মর্যাদার অফিসাররাও  ছিলেন । সম্প্রতি মেমারি থানা অধীন পালসিট পুলিশ ফাঁড়ির ৯ পুলিশ কর্মীর  এক সঙ্গে করোনা পজিটিভ ধরা পড়ায় ফাঁড়ি বন্ধ করে দিতে হয়েছিল । এবার করোনার থাবায় প্রায় ৬৮ বছরের পুরানো  খণ্ডঘোষ থানায় এই প্রথম তালা পড়লো ।  খণ্ডঘোষের জেলাপরিষদ সদস্য অপার্থিব ইসলাম এদিন বলেন ,ছোট বয়স থেকে কোন দিন দেখিনি তালা বন্ধ খণ্ডঘোষ থানা ।  খণ্ডঘোষ থানা আগে ছিল পুলিশ ফাঁড়ি । ১৯৫২ সালে খণ্ডঘোষ পুলিশ ফাঁড়ি খণ্ডঘোষ থানায় উন্নিত হয় । ’ সেই থেকে  কোনদিন খণ্ডঘোষ থানায় তালা পড়েনি । কিন্তু করোনার থাবায় রাজ্যে  মধ্যে প্রথম  তালা পড়লো খণ্ডঘোষ থানা ।  





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।